কাশ্মীরের কফতা বাঁধ: জানা অজানা তথ্য
কাশ্মীরের কফতা বাঁধ: জানা অজানা তথ্য
কফতা বাঁধের প্রেক্ষাপট
কাশ্মীরের কফতা বাঁধ ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের কিশ্তোয়ার জেলার চেনাব নদীর উপর অবস্থিত একটি বহুমুখী প্রকল্প। এই বাঁধটি নির্মাণ করা হয়েছে বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের উদ্দেশ্যে।
বাঁধের বৈশিষ্ট্য
* উচ্চতা: 167.6 মিটার
* দৈর্ঘ্য: 2,724 মিটার
* জলধারণ ক্ষমতা: 6.45 বিলিয়ন ঘন মিটার
* বিদ্যুৎ উৎপাদন ক্ষমতা: 540 মেগাওয়াট
বাঁধ নির্মাণের ইতিহাস
কফতা বাঁধের নির্মাণ কাজ শুরু হয় 1985 সালে। প্রকল্পটি সম্পন্ন করতে প্রায় 30 বছর সময় লেগেছিল। বাঁধটির আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করা হয় 2018 সালের মে মাসে।
বাঁধের উদ্দেশ্য
কাশ্মীরের কফতা বাঁধের নিম্নলিখিত উদ্দেশ্য রয়েছে:
বন্যা নিয়ন্ত্রণ
* বাঁধটি চেনাব নদীর বন্যাকে নিয়ন্ত্রণ করতে সহায়তা করে, যা অতীতে কিশ্তোয়ার উপত্যকায় ব্যাপক ক্ষতির কারণ হয়েছে।
সেচ
* বাঁধের জলাধার থেকে প্রায় 6.6 লাখ হেক্টর জমির সেচ করার ক্ষমতা রয়েছে, যার ফলে কৃষি উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।
জলবিদ্যুৎ উৎপাদন
* বাঁধে 3টি ফ্রান্সিস টার্বাইন রয়েছে, যা মোট 540 মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করতে পারে।
বাঁধের প্রভাব
কাশ্মীরের কফতা বাঁধের নিম্নলিখিত প্রভাব রয়েছে:
সামাজিক-অর্থনৈতিক প্রভাব
* বাঁধের নির্মাণে প্রায় 10,000 মানুষের পুনর্বাসন প্রয়োজন হয়েছিল।
* বাঁধ থেকে উৎপাদিত বিদ্যুৎ অঞ্চলের শিল্প ও অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে।
পরিবেশগত প্রভাব
* বাঁধের জলাধার বনাঞ্চল এবং বন্যপ্রাণী আবাসস্থলের একটি বড় অংশ জলমগ্ন করেছে।
* বাঁধের নির্মাণ নদীর প্রাকৃতিক প্রবাহে পরিবর্তন এনেছে, যা মাছের популяцию এবং নদীর生態তন্ত্রকে প্রভাবিত করতে পারে।
বাঁধ নির্মাণে চ্যালেঞ্জ
কাশ্মীরের কফতা বাঁধের নির্মাণ কাজে নিম্নলিখিত চ্যালেঞ্জগুলির সম্মুখীন হতে হয়েছিল:
* ভূমিকম্প সংক্রান্ত সক্রিয়তা: কফতা বাঁধ অঞ্চলটি ভূমিকম্প সংক্রান্ত সক্রিয়তার জন্য পরিচিত।
* ভূতাত্ত্বিক অস্থিরতা: বাঁধের অবস্থান জটিল भूवैज्ञानिक संरचनाओं দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে।
* দুর্গম ভূখণ্ড: বাঁধের নির্মাণ কাজটি দুর্গম ভূখণ্ডে সম্পাদন করা হয়েছিল, যা পরিবহন ও উপকরণ সরবরাহকে কঠিন করে তুলেছিল।
বাঁধের অনন্য বৈশিষ্ট্য
কাশ্মীরের কফতা বাঁধের নিম্নলিখিত অনন্য বৈশিষ্ট্য রয়েছে:
* গুরুত্বপূর্ণ কংক্রিট ভলিউম: বাঁধের নির্মাণে প্রায় 5 मिलियन ঘন মিটার কংক্রিট ব্যবহার করা হয়েছিল।
* রোলার কমপ্যাক্ট কংক্রিট প্রযুক্তি: বাঁধের নির্মাণে রোলার কমপ্যাক্ট কংক্রিট প্রযুক্তি ব্যবহার করা হয়েছে, যা আরও দ্রুত এবং কার্যকর নির্মাণ পদ্ধতি।
* বৃহত্তম স্পিলওয়ে গেট: বাঁধের স্পিলওয়েতে বিশ্বের বৃহত্তম রেডিয়াল গেট রয়েছে।
বাঁধের মজার ঘটনা
কাশ্মীরের কফতা বাঁধ সম্পর্কে কিছু মজার ঘটনা নিচে দেওয়া হল:
* বাঁধের নির্মাণে প্রায় 10,000 শ্রমিক এবং প্রকৌশলী জড়িত ছিল।
* বাঁধের জলাধারে প্রায় 70টি দ্বীপ রয়েছে।
* বাঁধের স্পিলওয়ে গেটগুলি প্রতি সেকেন্ডে 40,000 ঘন মিটার পানি ছাড়তে পারে।
বাঁধের ভবিষ্যৎ
কাশ্মীরের কফতা বাঁধ অঞ্চলের ভবিষ্যতের উন্নয়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে এটি নির্ধারিত। বাঁধের নির্মাণে সৃষ্ট জলাধার পর্যটন, রিক্রিয়েশন এবং মৎস্য চাষের জন্য নতুন সুযোগ তৈরি করছে।
বাঁধের গুরুত্ব
কাশ্মীরের কফতা বাঁধ ভারতের জম্মু ও কাশ্মীর রাজ্যের একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প। এটি বন্যা নিয়ন্ত্রণ, সেচ এবং জলবিদ্যুৎ উৎপাদন প্রদান করে অঞ্চলের সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নে অবদান রাখছে। বাঁধটি অঞ্চলের দুর্গম ভূখণ্ডে অবস্থিত, এর নির্মাণে বেশ কয়েকটি চ্যালেঞ্জের সম্মুখীন হতে হয়েছিল, কিন্তু এটি কাটিয়ে উঠেছে এবং আজ এটি ভারতের অন্যতম বৃহত্তম এবং সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বাঁধগুলির মধ্যে একটি।
