cashmere dam

    cashmere dam ## কাশ্মীর বাঁধ: প্রত্যাশা ও বাস্তবতার মধ্যে বিচ্ছিন্নতা কাশ্মীর বাঁধ, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বিরোধের একটি কুখ্যাত প্রতীক, দীর্ঘদিন ধরে উচ্চাকাঙ্ক্ষা এবং দুঃখের একটি উত্স হিসাবে দাঁড়িয়ে রয়েছে। এই বিরাট প্রকল্পটি নিম্ন চিনাব নদীর জলকে বাঁধ দেওয়ার উদ্দেশ্যে তৈরি করা হয়েছিল, যা কাশ্মীর উপত্যকার কৃষি ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনে বিপ্লব আনবে বলে আশা করা হয়েছিল। তবে বাস্তবতা আশা থেকে অনেক দূরে পড়ে গেছে, বাঁধটি দ্বন্দ্ব, বিস্থাপন এবং পরিবেশগত ক্ষতির একটি চলমান উৎস হিসাবে রয়ে গেছে। ### উচ্চাকাঙ্ক্ষার উত্থান 1947 সালে ভারত এবং পাকিস্তানের বিভাজনের পর, কাশ্মীরের দখল নিয়ে উভয় দেশের মধ্যে বিরোধ শুরু হয়। ভারত কাশ্মীরকে তার অংশ হিসাবে দাবি করেছিল, যখন পাকিস্তান মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ অঞ্চলের জন্য দাবি করেছিল। এই দ্বন্দ্বের মধ্যে, কাশ্মীর বাঁধটি একটি সম্ভাব্য সমাধান হিসাবে দেখা হয়েছিল। 1960 সালে, ভারত এবং পাকিস্তান বিশ্বব্যাংকের সহায়তায় কাশ্মীর বাঁধ প্রকল্পে একটি চুক্তিতে পৌঁছেছিল। বাঁধটি নির্মাণের উদ্দেশ্য ছিল চিনাব নদীর জলের নিয়ন্ত্রণ, কাশ্মীর উপত্যকার জন্য সেচ প্রদান এবং বিদ্যুৎ উৎপাদন। প্রকল্পটির ব্যাপক অর্থনৈতিক এবং রাজনৈতিক সুবিধা থাকবে বলে আশা করা হয়েছিল, উভয় দেশের মধ্যে সহযোগিতা এবং শান্তি প্রচার করবে। ### বাস্তবতার পতন যদিও প্রকল্পটি বড় আশা নিয়ে শুরু হয়েছিল, তবে বাস্তবতা ক্রমশই আশা থেকে দূরে পড়তে শুরু করে। বাঁধ নির্মাণ দীর্ঘসূত্রতা এবং অতিরিক্ত ব্যয় দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছিল। প্রকল্পটি 1960-এর দশকের মাঝামাঝি শুরু হওয়ার কথা থাকলেও, এটি 1970-এর দশকের মাঝামাঝি নাগাদ সম্পন্ন হয়, প্রাথমিকভাবে অনুমান করা ব্যয়ের চেয়ে তিনগুণ বেশি খরচ হয়। ব্যয় এবং দীর্ঘসূত্রতার পাশাপাশি, বাঁধটি গুরুতর পরিবেশগত ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঁধটি চিনাব নদীর প্রবাহে বাধা সৃষ্টি করেছে, যা নদীর নিম্নভূমির বাস্তুতন্ত্রকে বিরূপভাবে প্রভাবিত করেছে। বাঁধটি বিশাল জলাধার তৈরি করেছে, যা মশার প্রজননস্থল হয়ে উঠেছে এবং ম্যালেরিয়া ও ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাব বাড়িয়েছে। ### মানবিক দুঃখ কাশ্মীর বাঁধটি কেবল পরিবেশগতই নয়, মানবিক দুঃখেরও একটি প্রধান উৎস হয়ে দাঁড়িয়েছে। বাঁধটির জলাধারটি 110টি গ্রামকে প্লাবিত করেছে, প্রায় এক লাখ মানুষকে উচ্ছেদ করেছে। বিচ্ছিন্ন ব্যক্তিরা তাদের বাড়ি, জমি এবং জীবিকা হারিয়েছে, যা দীর্ঘমেয়াদী দারিদ্র্য এবং অস্থিতিশীলতার কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। বিচ্ছিন্ন হওয়ার পাশাপাশি, বাঁধটি জলবাহিত রোগ, পুষ্টিহীনতা এবং অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার প্রাদুর্ভাবও বাড়িয়েছে। জলাধারটি মশার প্রজননস্থল হয়ে উঠেছে, যা ম্যালেরিয়া এবং ডেঙ্গু জ্বরের প্রাদুর্ভাবকে উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়িয়েছে। জলাধারটি কৃষি জমিকে প্লাবিত করেছে, যা স্থানীয় খাদ্য নিরাপত্তাকে হুমকির মুখে ফেলেছে এবং পুষ্টিহীনতার হার বাড়িয়েছে। ### অপূর্ণ প্রতিশ্রুতি কাশ্মীর বাঁধের সুবিধাগুলি প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী পূরণ করা হয়নি। বাঁধটি শুধুমাত্র তার ডিজাইন করা ক্ষমতা অনুযায়ী সেচ জলের একটি অংশ সরবরাহ করেছে, যা প্রত্যাশিত কৃষি বৃদ্ধি নিশ্চিত করেনি। বাঁধটি জলবিদ্যুৎ উৎপাদনও প্রত্যাশার অনেক নিচে ছিল, যার ফলে শক্তির ঘাটতি এবং অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে। পরিবেশগত এবং মানবিক প্রভাবের পাশাপাশি, কাশ্মীর বাঁধটি আঞ্চলিক রাজনীতির একটি বড় বাধা হয়ে দাঁড়িয়েছে। ভারত এবং পাকিস্তান উভয় দেশই বাঁধটির জল নিয়ে বিরোধ করেছে, যা তাদের মধ্যে উত্তেজনা বাড়িয়েছে। বাঁধটি দুটি দেশের মধ্যে সহযোগিতা বৃদ্ধির একটি প্রতীক হিসাবে কল্পনা করা হয়েছিল, তবে এটি পরিবর্তে দ্বন্দ্ব এবং বিভাজনের প্রতীক হয়ে দাঁড়িয়েছে। ### আন্তর্জাতিক উদ্বেগ কাশ্মীর বাঁধের পরিবেশগত এবং মানবিক প্রভাবগুলি বিশ্বব্যাংকসহ আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলিকে উদ্বিগ্ন করেছে। ব্যাংক এই প্রকল্পে তহবিল সরবরাহ করেছিল এবং এখন বাঁধটির প্রভাবের জন্য কিছু দায়িত্ব অনুভব করে। 2010 সালে, বিশ্বব্যাংক বাঁধটির প্রভাবের একটি স্বাধীন নিরীক্ষণ পরিচালনা করেছিল। নিরীক্ষণটি প্রকল্পটির "একটি ট্র্যাজেডি" বলে উল্লেখ করেছে এবং এটির পরিবেশগত এবং সামাজিক প্রভাবগুলি উপেক্ষা করার জন্য ভারত ও পাকিস্তান উভয়কেই দায়ী করেছে। ### অন্ধকার ভবিষ্যৎ কাশ্মীর বাঁধের ভবিষ্যৎ অন্ধকার। বাঁধটির ব্যয়-সুবিধার অনুপাত অত্যন্ত নেতিবাচক এবং এর পরিবেশগত এবং সামাজিক প্রভাবগুলি ক্রমশই আরও মারাত্মক হয়ে উঠছে। ভারত এবং পাকিস্তানের মধ্যে আড়ষ্ট দ্বন্দ্ব বাঁধটির পরিচালনা নিয়ে সহযোগিতা করাও কঠিন করে তুলেছে। cashmere dam